ভারতে হওয়া বৃষ্টি চুরি করবে চীন! বেরিয়ে এল জিনপিংয়ের চাঞ্চল্যকর ষড়যন্ত্র
ঘটনার সুত্রপাত হয় ২০০৮ সালের ৮ আগস্ট, একদিকে চলছিল অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অন্যদিকে চীনা আবহাওয়া পরিবর্তন অফিস বৃষ্টি নিয়ন্ত্রণের জন্য ১,১০৪ টি বৃষ্টি বিচ্ছুরণকারী রকেট ফায়ার করেছিল। ওই রকেট অলিম্পিকের ময়দানে ধেয়ে আসা বৃষ্টিপাতকে থামিয়ে দেয়। সমগ্র প্রক্রিয়াটি প্রায় আট ঘন্টা ধরে চলছিল। ২১ টি বিভিন্ন সাইট থেকে রকেট উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল।
বেইজিংয়ে বর্ষাকাল আগস্ট মাস এবং আবহাওয়া অফিস অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের রাতে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল। স্টেডিয়ামের চারপাশে আর্দ্রতা ছিল প্রায় ৯০ শতাংশের আশেপাশে এবং রিপোর্ট অনুযায়ী বলা হয়েছিল ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং, এটি চীনের আবহাওয়া নিয়ন্ত্রকদের একটি সফল প্রচেষ্টা ছিল।
অলিম্পিকের সময় চীনের আবহাওয়াবিদদের সফল প্রচেষ্টায় ৬০ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে চীনা আবহাওয়াবিদরা কৃত্রিম আবহাওয়া ম্যানিপুলেশনকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, বর্তমানে চীনে ৩৭০০০ এরও বেশি মানুষ দেশব্যাপী আবহাওয়া পরিবর্তন কার্যক্রমের অধীনে কাজ করছে। আবহাওয়া ম্যানিপুলেশনের জন্য চীনের ৩০ টিরও বেশি প্রদেশ এবং পৌরসভায় সমস্ত যন্ত্রপাতি রয়েছে।
চীনের আবহাওয়াবিদদের কাছে আনুমানিক ৭০০০ বিমান-বিরোধী বন্দুক এবং ৫,০০০ বিশেষ রকেট লঞ্চার রয়েছে। চীন বিশ্বের বৃহত্তম কৃত্রিম আবহাওয়া পরিবর্তন কর্মসূচির অন্যতম উন্নত দেশ। চীনের মূল লক্ষ্য শুষ্ক এলাকায় বেশি বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি এবং অতিরিক্ত রোদের তেজে সোনালী ক্ষেতের ধ্বংস আটকানো।
এর আগে, চীন ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের প্রায় ৬০% এলাকা জুড়ে কৃত্রিম বৃষ্টি তৈরির ঘোষণা করেছিল। সবচেয়ে আকর্ষণীয় তথ্য, কিন্তু এই ক্ষমতাগুলির অপপ্রয়োগ জলবায়ু পরিবর্তনের বর্তমান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চীনের সাম্প্রতিক প্রকল্পটি স্পেনের চেয়ে তিনগুণ বেশি এলাকায় কৃত্রিম বৃষ্টি ঘটানোর লক্ষ্যে যা তিব্বতীয় মালভূমি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তা ভারতে উদ্বেগের একটি প্রধান কারণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন যে প্ল্যানিং এর উপর কাজ করছে তাতে ভবিষ্যতে ভারতকে ভবিষ্যতে জলকষ্টে ভুগতে হতে পারে। আর সেই কারণে এখন থেকেই ভারতের প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
এশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নদীগ গঙ্গা, সিন্ধু, ইরাবতী, ব্রহ্মপুত্র, মেকং এবং সালভিন। তারা লাওস, মায়ানমার, চীন, পাকিস্তান, নেপাল, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। যেহেতু মালভূমি একটি পরিবেশগত সীমানা হিসাবে বিবেচিত হতে পারে, তাই কেবল ভারত নয়, অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলিতে ভঙ্গুর বাস্তুতন্ত্রের একটি বিশাল পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, চীনে প্লাশিয়াম ক্লোরাইড, সোডিয়াম ক্লোরাইড এবং সিলভার আয়োডাইডের মতো রাসায়নিক পদার্থ স্প্রে করার জন্য এবং এয়ারক্র্যাফট ব্যবহার করে ‘ক্লাউড সিডিং’ -এর পরীক্ষা করা হয়, এতে জলবায়ু পরিবর্তন হবে এবং তিব্বতীয় মালভূমিতে তাপমাত্রার আনুমানিক বৃদ্ধি এবং মৌসুমী বৃষ্টিপাত হ্রাসের কারণে মারাত্মক খরা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এক্ষেত্রে ভারতের উচিত ভূ -স্থানিক প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের উত্তর -পূর্ব অঞ্চলে নজরদারির ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করা। একই সাথে বন্যার পূর্বাভাসের জন্য নিজস্ব জলবিদ্যুতের মডেল তৈরির কাজ করা এবং নিয়মিতভাবে নদীর প্রবাহ পরীক্ষা করা। নিজস্ব জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বর্ষার জলপ্রবাহের তথ্য এবং বন্যার মৌসুমের তথ্য সংগ্রহ করে কোথায় কোথায় ভয়াবহ অবস্থা রয়েছে তা সনাক্ত করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা কারণ তা না হলে চীনের উপদ্রবে আগামী দিনে সমগ্র দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিতে পারে।