রবার্ট বঢড়ার (Robert Vadra) পরিবার শিয়ালকোটের বাসিন্দা ছিল, যেটা এখন পাকিস্তানে অবস্থিত। বঢড়ার পুর্বপুরুষেরা শিয়ালকোট থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে বেঙ্গালুরুতে এসে বসবাস করেছিলেন। তারপর সেখানে তাঁরা সুবিধা না করতে পারায়, উত্তর প্রদেশের মুরাদাবাদে এসে ঘাঁটি গাড়ে। রবার্ট বঢড়ার এর দাদু পিতলের ব্যাবসায়ি ছিলেন। রাজেন্দ্র বঢড়ার যিনি রবার্ট বঢড়ার পিতা ছিলেন, তিনি মুরাদাবাদে একটি পিতলের দোকান খুলে সেখানে পিতলের মূর্তি, বাসন বিক্রি করতেন। তারপর রাজেন্দ্র বঢড়ার সাক্ষাৎ মোরিন নামক এক অ্যাংলো ইউরোপিয়ান মহিলার সাথে হয়। মোরিন ও ভারতে পিতলেরই কাজ করতেন। তাঁরা একসাথে কাজ করতে করতে একে অপরের সাথে বিয়ে করে ফেলেন।
তাঁদের তিন সন্তান ও হয়, তাঁদের মধ্যে রবার্ট বঢড়ার একজন। রবার্টের পরিবার খুব গরীব ছিল, আর খুব সাধারণ জীবন যাপন করত। কিন্তু রবার্টের মা অ্যাংলো ব্রিটিশ মহিলা ছিলেন, আর সেই সুবাদেই তিনি নিজের সন্তানদের ব্রিটিশ স্কুলে ঢুকিয়ে দেন। ওই স্কুলে শুধু বড়লোকদের সন্তানেরাই পড়াশোনা করতে পারত। কিন্তু মোরিন তার সন্তানদের ওই স্কুলে পড়াতে সক্ষম হন, কারণ তিনি ব্রিটিশ ছিলেন। রবার্ট বঢড়ার মাত্র দশম শ্রেণী পর্যন্তই পড়াশুনা করেছিলেন। ওই স্কুলেই রাজীব গান্ধীর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও পড়ত। আর একসাথে পড়তে পড়তে দুজন দুজনকে পছন্দ করে ফেলেন। আর প্রিয়াঙ্কা ১৯৯৭ সালে সোনিয়া গান্ধীকে কনরকমে রাজি করিয়ে বিয়েও করে ফেলে।
১৯৮০ এর দশকে রবার্ট বঢড়ার মুরাদাবাদের রাস্তায় মা আর ভাই বোনেদের সাথে রিকশায় চলা ফেরা করতেন। তাঁদের কাছে একটি স্কুটার ও ছিল না। রবার্টের বাবা রাজেন্দ্র একা কামাতেন আর সংসার চালাতেন। মুরাদাবাদের থাকা কালীন এরা খুবই সাধারণ জীবন যাপন করত। ১৯৯০ সালে রাজেন্দ্রর ব্যাবস্যা একটু উন্নতি হয়, আর উনি একটি পুরানো জীপ কেনেন। প্রিয়াঙ্কা আর রবার্টের বিয়ের আগে তাঁরা ওই পুরানো জীপেই ঘুরে বেরাত। কিন্তু সেই সময় তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৫০ হাজার টাকাও ছিলনা।
তারপর প্রিয়াঙ্কার সাথে রবার্টের বিয়ে হল, আর দেখতে দেখতে রবার্টের জীবন পাল্টে গেলো। দেশ বিদেশ ঘোরা আর নতুন নতুন গাড়ি তখন রবার্টের নিত্যসঙ্গী। তারপর সে ২০০৭ সালে ১ লক্ষ টাকা ব্যাবসায় বিনিয়োগ করে, এবং সেটাও দেখতে দেখতে ৩০০ কোটি টাকা হয়ে যায়। ১ লক্ষ থেকে সোজা ৩০০ কোটি দেখে শুধু দেশই না, বিদেশের মানুষেরাও হয়রান হয়ে যায়।
তারপর উনি ব্যাবসায়ি ক্ষেত্রে ২০০৭ সালে ১ লক্ষ টাকার মত বিনিয়োগ করেছিলেন। আর সেই ১ লক্ষ টাকা দেখতে দেখতে ৩০০ কোটি হয়ে যায়! তখন সরকার কংগ্রেসের ছিল, আর কংগ্রেসের আমলে ব্যাবসায়ে এতটাই উন্নতি ছিল যে, ১ লক্ষ টাকা থেকে ৩০০ কোটির মালিক হওয়া প্রায় জলভাতই ছিল দেশের মানুষদের কাছে।
এখন রবার্ট বঢড়ার সম্পত্তি আনুমানিক ১১ হাজার কোটি টাকার। এনার কাছে বেনামি সম্পত্তির অভাব নেই, আর কিছু সোর্স অনুযায়ী এনার কাছে তো ১৫ হাজার কোটি টাকার ও বেশি সম্পত্তি আছে। আবার বিদেশেও ওনেক সম্পত্তি।
যেই ব্যাক্তি ও তার পরিবার হয় হেঁটে নাহলে রিক্সায় ভ্রমন করত। আজ তার কাছে ডজন ডজন লাক্সারি গাড়ি আছে। বিদেশ এবং ভারতে সম্পত্তি এত আছে, যে ইনি নিজেই সেই হিসেব দিতে পারেন না। কিন্তু কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর অনুসারে, চৌকিদার চোর। আর ওনার বোনের স্বামী স্বচ্ছ ব্যাবসায়ী। কিন্তু রাহুলজি এটা বলেন না যে, ওনার বোনের জামাই এর কাছে মন কি ফর্মুলা আছে যে, কদিনের মধ্যে ১ লক্ষ টাকা ৩০০ কোটি হয়ে গেলো!